Home»   » বাংলাদেশের মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে আবারও সমস্যায়

বাংলাদেশের মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে আবারও সমস্যায়

নিউজ ডেক্স: মালয়েশিয়ায় যেসব বিদেশি শ্রমিক কাজ করেন তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশের। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় বাড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর চলতি পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। শুক্রবার দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান সেখানকার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

 

ঐ খবরে আরো বলা হয়েছে, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে আর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হবে।

মালয়শিয়ার অনলাইন-ভিত্তিক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টারে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী বলেছেন, মানব পাচার এবং অভিবাসন ব্যয় বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে, সে কারণে এ সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে একটা পূর্ণ তদন্ত শেষ হবার আগ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানান তিনি।

 

কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থায় লোক পাঠানো স্থগিত করার মানে কি?

 

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সহ সভাপতি মো ফারুক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বর্তমান পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে বাংলাদেশের মোট ১০টি এজেন্সিকে সে দেশের সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু এই এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে এখন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

তিনি বলেন, “সরকারের বেশির ভাগ লোক এবং আমরাও অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনতে চাই। আমাদের অভিবাসন ব্যয় আসলেই অনেক বেশি। কিন্তু আমাদেরই অনেক সদস্যের আন্তরিকতার অভাবে আমরা সেটা কমাতে পারছি না। দুই দেশের সরকার যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়, তাহলে অভিবাসন ব্যয় কমানো সম্ভব।”

 

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে হলে যে কাউকে প্রায় চার লাখ কুড়ি হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। পুরোনো পদ্ধতিতে অর্থাৎ ২০১৬ সালের আগে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেকোনো রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে পারতো। ঐ বছর মালয়েশিয়ার সরকার নতুন পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ১০টি এজেন্সিকে নির্ধারণ করে দেয় যারা সেদেশে শ্রমিক পাঠাতে পারবে। কিন্তু সিন্ডিকেটের অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশের ঐ ১০টি এজেন্সির কর্মকান্ড স্থগিত করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফলে পুরনো পদ্ধতি অনুযায়ী মালয়েশিয়া সরকার জি টু জি বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরে যাবে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিক। “যেসব ভিসা লেগে গেছে, সেগুলো বতর্মান নিয়ম অনুযায়ীই যাবে। আর যেগুলো প্রসেস হচ্ছে, সেগুলো যদি সরকার দায়িত্ব নিয়ে নেয়, মানে তারা যদি বলে যে আমরা নিজেরাই পাঠাব, সে অনুযায়ী পয়সা নেব, তাহলে সমস্যা হবার কথা না।”

ফাইল ছবি: বাংলাদেশের মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে আবারও সমস্যায়

কিন্তু নতুন এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ সরকার এখন কী ব্যবস্থা নেবে?

এই প্রশ্নে জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার সরকার এ বিষয়ে এখনো বাংলাদেশ সরকারকে কিছু জানায়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সিদ্ধান্ত জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এখন রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খরচ বাড়ানোর অভিযোগ তদন্তে মালয়েশিয়ার সরকারের কতদিন সময় লাগবে সেটা কেউই বলতে পারছে না।

 

নিউজ/আইসি