Home»   » ভোলার কাঁকড়া চাষের নতুন সম্ভাবনা

ভোলার কাঁকড়া চাষের নতুন সম্ভাবনা

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন / ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার সাগরমোহনার দ্বীপ কুকরি মুকরিতে শুধু পর্যটনের জন্যই নয় ,বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অল্প সময়ে বেশী লাভবান হওয়ায় বাড়ছে খামার ও কাঁকড়া শিকারের সংখ্যা। ইলিশ,চিংড়ির পর এবার কাঁকড়া এখন এ অঞ্চলের জেলেদের কাছে মূল্যবান সম্পদ। ইতো মধ্যেই কাঁকড়া চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন অনেকেই। তবে পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রক্রিয়াজাত করণে সহায়তা পেলে কাঁকড়া রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার মানুষ।

 

দেশে-বিদেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভোলার চরফ্যাশনের কুকরি মুকরিতে খামারে কাঁকড়া চাষ শুরু হয়েছে। স্বল্প বিনিয়োগে অধিক লাভজনক হওয়ায় উপকূলীয় এ অঞ্চলে কাঁকড়ার চাষ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

 

কয়েক বছর আগে কুকরি মুকুরির কাঁকড়া চাষি খলিলুর রহমান, অনাবাদি ১৫ একর জমিতে ঘের তৈরী করে শুরু করে কাঁকড়া চাষ। নদী থেকে জেলেদের ধরে আনা কাঁকড়ার বাচ্চা ওই খামারে ছাড়ে। এর পর জেলেদের ফেলে দেয়া কুচিলা,পচা চিংড়ি এবং সুটকি মাছ কাঁকড়ার খাবার হিসাবে ব্যবহার করে। মাত্র ৩ মাস পরই তা ২শ থেকে ৩শ গ্রাম ওজনে পরিনত হয়। এর পর বিক্রির জন্য ঢাকায় পাঠানো হয় এসব কাঁকড়া। সেখান থেকে প্রক্রিয়াজাত করে দেশের বাইরে রপ্তানি করা হয়।

 

খলিলুর রহমান কাঁকড়ার চাষ করে বছরে কয়েক লাখ টাকার মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে বলে কাঁকড়া চাষে আগ্রহি হয়ে পড়ছে উপকূলীয় এলাকার বহু মানুষ।স্থানীয়দের হিসেব অনুযায়ী ভোলা থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৭’শ কেজি কাঁকড়া ঢাকায় যায় এবং এর বেশির ভাগই বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

 

এদিকে ভোলার দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে মাছ কমে যাওয়ায় বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে কাঁকড়া শিকার বেছে নিয়েছেন জেলেরা। খাল বিলের পানি কমে যাওয়ায় জানুয়রী মাস থেকে চর কুকরী-মুকরীসহ সাগরমোহনার ডুবোচর ও ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলগুলোতে প্রতিদিন শত শত জেলে কাঁকড়া শিকার করেন। আর এসব কাঁকড়া ধরে চাষীদের খামারে সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব কাঁকড়ার আকার ভেদে ৪শ থেকে ৮’শ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি করেন তারা।

ভোলার কাঁকড়া চাষের নতুন সম্ভাবনা

কাঁকড়া শিকারী আর ছোট বড় এসব খামারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে আরও এক হাজারেরও বেশি মানুষের। তারাও এখন সংসারে অভাব দুর করে সাবলম্বি হয়েছেন।

 

কাঁকড়া খামারে কর্মরত শ্রমিক লাভজনক ও সম্ভাবনাময় হওয়ায় সরকারী বেসরকারীভাবে কাঁকড়া চাষে এগিয়ে আসার দাবি কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হাসেম।

 

এবিষয় আবুল হাসেম কুকরি মুকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে একটি প্রকল্প গ্রহন করে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাঁকড়া চাষে উদ্বুদ্ধ করা চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা।

 

এব্যাপারে ভোলা জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, সম্ভাবনাময় এই কাঁকড়া চাষের ব্যাপারে সরকারের সহযোগীতা পেলে এক দিকে যেমন বেকারদের কর্মসংস্থান হবে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে বৈদেশিক মুদ্র অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।